টাকা রোজগার করার মনোবিজ্ঞান The Psychology of Money by Morgan Housel

টাকা রোজগার করার মনোবিজ্ঞান | The Psychology of Money by Morgan Housel

Lifestyle Education Tips and Tricks

বাপরে নতুন আই ফোন বেরুতে পারল না এরই মধ্যে রমেসের কেনাও শেষ হয়ে গেল। আর আমি সামান্য এক কাম্পানিতে চাকরি করি আমার দ্বারা হয়তো আর কোন দিনও ধনী হওয়া হবে না। আমাদের সকলেরই কোন না কোন সময় কারোর মোবাইল,পোশাক, বাড়ি, গাড়ি দেখে মনে হয় যে তারা খুব ধনী। আর তখনই আমাদের মনের মধ্যে স্লেফ ডাউট কাজ করে যে আমরা বোধয় আর কোন দিনও ধনী হতে পারব না। কিন্তু যদি আমি আপনাকে বলি যে যারা ওরকম দামি মোবাইল, পোশাক, বাড়ি, গাড়ি কেনে তারা পকৃত অর্থে বড়লোক নয় তাহলে আপনি কি বিশ্বাস করবেন? হয়ত না। আর সেই জন্যই আমি আজকে আপনার টাকা এবং ধনী হওয়া সংক্রান্ত কিছু ভুল ধারনাকে বদলে ফেলার জন্য কিছু র্স্মাট আইডিয়া সেয়ার করবো। তো চলুন শুরু করা যাক।

নম্বর-১:সম্পদ হল যা আপনি দেখতে পাচ্ছেন না:

আগের গল্পতে আপনি যেমন দেখলেন রমেসের দামি মোবাইল দেখে মনে হলো সে খুব ধনী কিন্তু সত্যিটা কি আদও সেটা। হয়ত রমেস মোবাইল টা ই এম আই এ কিনেছে বা লোন নিয়েছে। অথবা যা টাকা রোজগার করেছে তার সবটাই খরচ করে হয়ত কিনেছে। এতে রমেস ধনী হওয়ার অনুভুতি হয়ত পেল কিন্তু সে আদো তো ধনী না বরং গরীবে পরিনত হোল। কারন হয় সে লোনে বা ই এম আই এ জরিয়ে পড়লো। বা পুরো টাকা খরচ করায় তার কাছে কিছুই থাকলো না। লেখক বলেছেন যে আজ হয়ত আপনাকে জিনিস কিনার উপর একটু লাগাম লাগাতে হবে যাতে ভবিষ্যতে আপনি অপসন গুলোকে একটু বাড়াতে পাড়েন। আপনি যত বেশিই টাকা রোজগার করুন না কেন আপনি যদি নিজের খরচকে নিয়ন্ত্রন করতে না পারেন তাহলে আপনি কখোনই ধনী হতে পারবেন না।

নম্বর-২:ধনী অনুভব করা আর ধনী হওয়া আলাদা ব্যাপার:

১৯২১ সালের ২৩ অক্টবর ইউনাইটেড স্টেডের ডামারস্টন গ্রামে রোনাল্ড রিড নামে একজন ব্যাক্তি জন্ম গ্রহন করে। তিনি তার পরিবারের প্রথম স্কর্লাস ব্যক্তি ছিলেন। এর পর তিনি দেশের সেনাবাহিনীতে কাজ করার পর এক গ্যাস স্টেসনে পারমানেন্ট চাকরি পান। সেখানে তিনি ২৫ বছর কাজ করেন। এর পর সেখান থেকে রিটায়ারের পর তিনি একটি স্টোর ক্লিনারের কাজ করেন ১৭ বছর। এর পর ২০১৪ সালে ২ রা জুন যখন তিনি মারা যান তখন তার পুরো সম্পত্যি হয়ে দারায় ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সারাজীবন এত সাধারন কাজ করার পরও তিনি কিভাবে এত টাকার মালিক হলেন? নিজের স্বাভাবিক জীবনযাপনের পর কিছু টাকা বিভিন্ন কম্পানিতে স্টক করার জন্য। তো স্বাভাবিক ভাবে আমরা এই গল্প থেকে এই শিক্ষা পাই যে ধনী অনুভব করা আর ধনী হওয়ার মধ্যে প্রচুর তফাৎ রয়েছে। আপনার হয়তো মনে হয় আপনি প্রচুর টাকা রোজগার করছেন তাই ধনী হতে গেলে আপনার দামি জিনিস লাগবে। কিন্তু আদোপে আপনি মানুষের কাছে সম্মান এবং প্রশংসা পেতে চাইছেন। কিন্তু আপনি যেটা ভুলে যাচ্ছেন সেটা হলো আপনি অন্যদের সাথে ভালো ব্যবহার করেও এই গুলো অর্জন করতে পারেন। 

নম্বর-৩: জীবনে কিছুই ফ্রি নয়:

জীবনের একটা কঠীন সত্য হলো কনো কিছুই আমরা ফ্রিতে বা বিনামূল্যে পাই না। তাতে সেটা আনন্দ বা মজাই হোক না কেন সবকিছুতেই আমাদের সময়, পরিশ্রম ইত্যাদি ব্যায় হয়। সেই রকম ভাবেই ধনী হওয়াও বিনামূল্যে সম্ভব নয়। আমাদের নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রন রাখা, দামী জিনিস পত্র না কেনার জন্য নিজের ইচ্ছা সক্তি ব্যবহার করা, অথবা স্টক র্মাকেটে ইনভেস্ট করলে কম্পানির স্টক ইনডেস্কের উপর নিচ উঠানামা তার জন্য নিজেকে শক্ত ও সান্ত রাখা এমন সব কিছুই করতে হয়।

নম্বর-৪: সবকিছুই চক্রবৃদ্ধি বিকাশ:

জীবনে যেকোন কিছুর বৃদ্ধি বা হ্রাস চক্রবৃদ্ধি হারে হয়। কেরিয়ার, সাস্থ্য,সম্পত্তি,সম্পর্ক ইত্যাদি সবকিছু। সেরকমই টাকা ইনভেস্ট করা আর তারপর সেটার পরিমান বাড়ানো এটাও চক্রবৃদ্ধি হারে হয়। আর এই বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ফলটি উপভোগ করতে গেলে আমাদের দরকার যেই প্রধান উপাদান তা হলো ধর্য্য। কাাজেই ভালো ইনভেস্টমেন্ট হলো সেটাই যেখানে টাকা ইনভেস্ট করার পর আর তাকে নিয়ে ভাবছেন না। বরং ধর্য্যে সাথে তাকে চক্রবৃদ্ধি হারে বারতে দিচ্ছেন। 

নম্বর-৫: আপনার সময়ের উপর নিয়ন্ত্রণ রেখে ধনী হন:

আপনি কখোনো কি ভেবে দেখেছেন যে আমরা টাকা কেন উপার্জন করতে চাই? টাকা থাকার জন্য আমাদের ঠিক কি লাভ হয়? অনেকেই হয়তো বলবেন টাকা থাকলে এটা কেনা যায় , ওখানে যাওয়া যায় ইত্যাদি। কিন্তু টাকা থাকার ফলে আমাদের সর্বপ্রথম প্রধান লাভ হলো আমরা নিজেদের জীবনের উপর এবং নিজের সময়ের উপর নিয়ন্ত্রন আনতে পারি। আর সেই নিয়ন্ত্রন দিয়ে আমরা আমাদের নিজেদের জীবনের লক্ষ্যে পৌছাতে পারি। লেখক র্মগান হাউস ও আমাদের ঠীক এই উপদেশ দিয়েছেন। 

নম্বর-৬: আপনার কী পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন তা আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে:

চলুন একটা প্রশ্ন নিয়ে ভাবা যাক। আমরা খাবার খাওয়ার সময় কি করে বুঝতে পারি যে আমাদের পেট ভর্তি হয়ে গেছে আর খাওয়ার দরকার নেই? দুটি উপায়ে এটা বুঝা যেতে পারে ১) খাওয়ার পর নিজের অনুভতির উপর লক্ষ্য রাখা এবং ঢেকুর উঠলে আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের পেট ভরে গেছে আর খাওিয়ার দরকার নেই। ২) ততক্ষন র্পযন্ত খেয়ে যাওয়া যতক্ষন না বমি হয়। দুটোর মধ্যে আমরা প্রথমটাকেই ব্যবহার করি। ঠিক সেই রকমই আপনার কতটা টাকা জীবনে দরকার সেটা আপনাকে ঠিক করে রাখা উচিত বা খুবই জরুরি। কারন টাকা উপার্জনের প্রচুর চাহিদায় আপনি কখন নিজের পরিবার, স্বাস্থ্য,সম্পর্ক এগুলো কে অবহেলা করে আপনি কখন এক অর্থ লোভি দানব হয়ে উঠছেন আপনি সেটা নিজেও যানতে পারবেন না। তাই কতটা টাকা পর্যাপ্ত তা ঠিক করে রাখলে অপরের টাকার সাথে তুলনা না করে আপনি এক সন্তস্টিপূর্ন জীবন যাপন করতে পারবেন। 

পরি শেষে আপনি এটা ভাববেন যে টাকা উপার্জনের জন্য আপনি যেই সিদ্ধান্ত টা নিয়েছেন সেটা কি আপনাকে ঠিক মত রাতে ঘুমাতে দিচ্ছে? এই প্রশ্নটি নিজেকে করলে আপনি কোন রকম চাপ ছারাই টাকা উপার্জন ও জীবনযাপন করতে পারবেন। তাই টাকা উপার্জন করার জন্য নিজেই নিজের মনোবিজ্ঞানী হওয়া খুবই গুরুত্ব পূর্ন । উপরের আলোচিত ধাপ গুলো অনুধাবনের মাধ্যমে আপনি আপনার জীবনের আসল উদ্দেশ্য খুজে খুব সহজেই ধনী হতে পারবেন যদি আপনি কঠোর পরিশ্রম করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারেন।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *