ভিটামিন ডি কী উৎস কি শুধুই সূর্য ঘাটতি হলে কী হয় Vitamin D

ভিটামিন ডি কী? উৎস কি শুধুই সূর্য? ঘাটতি হলে কী হয়? Vitamin D

Health

সূর্যের আলো থেকে আমরা ভিটামিন ডি পাই। আর ভিটামিন ডি এর অভাবে রিক্রেটস রোগ হয়। এরকম অনেক কথাই আমরা স্কুলে বইয়ে পড়েছি। কিন্তু আসলে ভিটামিন ডি কি? কেনো এটি গুরুত্বপূর্ণ? চলুন একটু জানার চেষ্টা করি।

ভিটামিন ডি কী?

ভিটামিন ডি হলো এক ধরনের স্ট্রেওয়েড হরমোন। যা শরীরে প্রোটিন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মানবদেহে কি পরিমান ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দরকার সেটি নিয়ন্ত্রন করে ভিটামিন ডি। এটি আমাদের মাংসপেশি, হাড় ও দাগের সুরক্ষার জন্য বিষণ ভাবে জরুরী। একই ভাবে ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। 

ভিটামিন ডি এর উৎস

ভিটামিন ডি কিন্তু আমরা সব থেকে বেশি সূর্যের আলো থেকে পাই। আমাদের শরীরের যে পরিমান ভিটামিন ডি এর দরকার থাকে তার প্রায় ৭০ শতাংশ আমরা সূর্যের আলো থেকে পাই। আর বাকী প্রায় ৩০ শতাংশ ভিটামিন ডি এর ঘাটতি ডাইটারি চার্ট থেকে পেয়ে থাকি। আমাদের যে ত্বক তার ঠিক নিচেই এক ধরনের কোলেস্টেরল আছে। আর এটি সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির সংস্পর্শ পেলেই ভিটামিন ডি উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। আমাদের লিভার ও কিডনি রাসায়নিক মাধ্যমে আমাদের শরীরের জন্য উপযোগী করে। ভিটামিন ডি এর ফলে খাবারের মাধ্যমে যে ক্যালসিয়াম গ্রহন করি সেটি শরীর ঠিকঠাক গ্রহন করতে পারে একই সঙ্গে আমাদের রক্তে কি পরিমান ক্যালসিয়াম থাকবে সেটিও ঠিক করে দেয়। তবে ঠিক কি পরিমান দরকার আমাদের শরীরে তা অঞ্চল, ঋতু এবং গায়ের রং বেদে নির্ধারন হয়ে থাকে। ডাক্তাররা বলছেন সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত ভিটামিন ডি তৈরির জন্য উপযুক্ত সময়। তবে সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি একটানা শরীরের জন্য ক্ষতিকরও বলছেন তারা। সূর্যের আলোর বাইরে ভিটামিন ডি এর উৎস আসলে খবই সীমিত। কিছু সামুদ্রিক তৈলাক্ত মাছ যেমন- স্যামন, সাদিন, টুনা ইত্যাদি, ডিমের কুসুম, চিজ ও রেড মিট থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এছাড়া ডাক্তাররা কিছু তেল সাবলিমেন্ট হিসেবে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 

ভিটামিন ডি ডেফিসিয়েন্সি বা ঘাটতি

কারো শরীরে ভিটামিন ডি ঘাটতি হলে সরাসরি সেটা হাড়ে গিয়ে প্রভাব ফেলে। এটি অনেক সময় জিন গত ভাবেও আসতে পারে। ছোট থেকে বড় সকলেই এই সমস্যায় পড়তে পারেন। বড়দের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি এর অভাবে যে সমস্যা হয় সেটাকে বলা হয় অস্টিওম্যালাসিয়া। আর ছোটদের ক্ষেত্রে এই সমস্যার নাম রিকেটস। এসবের জন্য হাড়ে ব্যাথা, পিঠে ব্যাথা এমনটি অনেক সময় হাড়ও ভেঙ্গে যেতে পারে। শুধু এগুলোই নয় সাম্প্রতিক আরও গবেষনায় নানান সমস্যার কথা উঠে আসছে। ভিটামিন ডি কমে গেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায় ফলে অনেকেই সামান্যতেই ঠান্ডা জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়া আশঙ্কা জনক হারে ওজন বৃদ্ধি বা ওজন কমে যাওয়ার ঘটনাও হতে পারে। এছাড়া কিছু গবেষনায় মানসিক বিষণ্যতার ঘটনাও দেখা যায়। এখন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর কি অবস্থা সেটা কিভাবে জানবেন। খুবই সহজ সেটা হলো রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে। এক্ষেত্রে রক্তের চারটি মাত্রা থাকে। 

  • যদি প্রতি লিটারে 25nmol/L এর নিচে হয় তাহলে রক্তে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি রয়েছে।
  • যদি প্রতি লিটারে 25 – 50 nmol/L এর মধ্যে হয় তাহলে রক্তে ভিটামিন ডি অপর্যাপ্ত।
  • যদি প্রতি লিটারে 50-75nmol/L এর মধ্যে হয় তাহলে রক্তে ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত রয়েছে।
  • যদি প্রতি লিটারে 75nmol/L এর উপরে হয় তাহলে রক্তে ভিটামিন ডি সন্তোষজনক রয়েছে।

ডাক্তাররা বলছেন- বয়স্ক যারা সূর্যের আলোতে কম বের হয় এবং যাদের শরীর বেশির ভাগ সময় ডাকা থাকে তাদের ভিটামিন ডি ঘাটতি বেশি দেখা যায়। একই সঙ্গে যেসব অঞ্চলে সূর্যের আলো কম, শীত প্রধান দেশ সেসব জায়গাও ভিটামিন ডি এর ঘাটতি থাকে। এছাড়া শহর ও গ্রাম জীবন যাপনের ধারা বেধেও পার্থক্য হতে পারে। ভিটামিন ডি শরীরে কম থাকলে ডাক্তাররা সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ঔষধ এর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আবার ভিটামিন ডি বেশি হলেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *