আজকে আমি আপনাদের নিরমল নামের একটি ছেলের খুবি সামান্য একটা চাকরি করে কোটিপতি হওয়ার গল্পটা সেয়ার কোরব। দুই বছর হলো নিরমল মাসে ৩০ হাজার টাকা বেতনের একটা চাকরি পেয়েছে। কিন্তু তার পরও নিরমল সেভিংস বলতে কিছুেই জমাতে পারেনি। এমনকি প্রতি মাসের শেষের দিকে নিরমলের এর ওর কাছ থেকে টাকা ধার চেয়ে হাত পাততে হচ্ছিল। এভাবেই একদিন মাসের শেষে নিরমলের হাতে আর টাকা না থাকায় বন্ধুর কাছে টাকা ধার চেয়ে হাত পাতায় ওর সেই বন্ধু এমন একটা কথা ওকে বলে দেয় যেটা নিরমলের মনে ভিসন ভাবে আঘাত করে। আর সেই দিন নিরমল পন করে যে সে এইবার যাই হেয়ে যাক না কেন এমন ব্যবস্থা করবে যে যাতে করে ওকে আর কোনোদিনো কারও কাছে টাকা ধারের জন্য হাত পাততে না হয়। সেই দিন নিরমল পন করে যে ও এইবার ওর সেই বন্ধুকে একদিন কোটিপতি হয়েই দেখাবে। এর পর থেকে নিরমল তার financial planning নিয়ে ভিসন সিরিয়েস হয়ে ওঠে। তাই সে এটা নিয়ে রির্সাচ করতে শুরু করে এবং গুগুলে র্সাচ করে প্রায় সব কন্টেন্ট পরে ফেলে। এ থেকে সে যা শিখছে তার একটি নোট তৈরি করে ফেলে এবং সেগুলো নিজের লাইফে এক এক করে এপলাই করতে শুরু করে। সবার প্রথমে নিরমল ওর ফোনে এক্সিও এপ্স টা ইনস্টল করে। আর নেকস্ট তিন মাস ধরে ও যদি একটাকাও কোনো কিছুতে খরচ করে সেটাও এক্সিও এপ এ রের্কড করে। এটা করার পর নিরমল পরিষ্কার ভাবে বুঝতে পাড়ে যে ও বাজে খরচগুলো ঠিক কোন কোন খাতে করে ফেলেছে। যেগুলো ও চাইলেই কমাতে বা পুরোপুরি ভাবে বন্ধ করে দিতে পারে। আর তাতে ওর ওভারোল লাইফস্টাইলেও কোনো বাজে ইফেক্ট পরবে না। যেমন নিরমল দেখল যে ও মাসে প্রায় ৩ হাজার টাকা শুধুমাত্র বাইরের ফাস্টফুড খেয়েই খরচ করে ফেলছে। যেটা ও একটু সচেতন হলেই এক হাজার কিংবা তার কমেও নামিয়ে নিয়ে আসতে পারে। একি ভাবে প্রতি মাসে ও গড়ে প্রায় ৪ হাজার টাকা করে জামাকাপড়,ঘড়ি,চশমা বা হেডফোন এই জাতীয় কিছু না কিছু সখের জিনিস কিনে খরচ করে ফেলছে। যেগুলো কেনার পর বেশিরভাগি ঘড়ের এক কোনায় পরে থাকে। তাই সেটাকেও ও একটু সচেতন হলে মাসে এক হাজার বা তার কমেও নামিয়ে নিয়ে আসতে পারে। এইভাবেই আরও একটু সচেতন হলেই আর বেশকিছু বাজে খরচ কমিয়ে নিতে পারলেই ও দেখলো অন্তত দশ হাজার টাকা করে তো ও ইজিলি জমাতে পারে। তো ও ওর এক্সিও এপে মাসিক খরচের একটি বাজেট বানালো। বিল্স বাবদ দশ হাজার।যার মধ্যে বাড়ি ভাড়া, ইলেকট্রিক বিল, ব্রোডব্যন্ডের বিল, মোবাইলের রির্চাজ এই সব ধরনের বিল্স। এরপর গ্রোসারিস অর্থাৎ চাল,ডাল,তেল,মাছ,মাংস ইত্যাদি সমস্ত আনাছপাতি বাবদ পাঁচ হাজার টাকা। ট্রান্সর্পোট অর্থাৎ বাস,ট্রেন আর বাইকের পেট্রল বাবদ দুই হাজার টাকা। বাইরে টুকটাক খাওয়া দাওয়া বাবদ এক হাজার টাকা। সিনেমা দেখতে যাওয়া অর্থাৎ বাইরের ইন্টারটেইনমেন্ট বাবদ এক হাজার টাকা। বাকি সব কিছু অর্থাৎ আর্দাস কেটাগরির জন্য এক হাজার টাকা। এই ভাবে নিরমল এক্সও এপে কেটাগরি অনুযায়ি বাজেট সেট করে নিল। আর নিজের প্রতিটা খরচের রের্কড এক্সিও এপে নিয়ম করে দিনের শেষে রোজ রাতে সুতে যাওয়ার আগে রের্কড করে রেখে দিতে শুরু করল। এইভাবে চোখের সামনে স্পষ্ট হিসেব দেখতে পাওয়ায় নিরমল আস্তে আস্তে প্রতি মাসে দশ হাাজার টাকা করে জমাতে সফল হলো। কিন্তু নিরমল জানত যে শুধু টাকা জমালেই তো আর কোটি পতি হয়ে ওঠা যায় না। আর তার জন্য টাকা দিয়ে টাকা রোজগার করতে হবে। অর্থাৎ জমানো টাকাগুলোকে সঠিক যায়গায় ইনভেস্ট করতে হবে। কিন্তু কোথায় যে ইনভেস্ট করা ওর জন্য সঠিক হবে সেটাই ও কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিল না। আর এই সমস্যা সমাধানের জন্য নিরমল আবার সেই গুগুল এ রির্সাচ করতে শুরু করলো। আর পুরো গুগুল ঘেটে নিরমল যেটা বুঝতে পারে বর্তমানে ইনভেস্টমেন্টের বেস্ট অফশোন হলো সেয়ার মার্কেট। কিন্তু ওর মত একজন যে সেয়ার মার্কেটের ব্যপারে বলতে গেলে কিছুই যানে না তার জন্য বেস্ট অপশোন হলো যে কোনো একটা ইনডেক্স ফান্ডে এস আই পি চালু করা আর পুরো পুরি সেয়ার মার্কেটের উঠানামার খবর থেকে নিজেকে দূরে রাখা। কারন তবেই একমাত্র সে ও তার এস আই পি টা দশ বা বিশ বছরের জন্য কান্টিনউ করে যেতে পারবে। না হলে মার্কেট পরে যাওয়ার খবর পেয়ে ও হয়তো ভয়ে এস আই পি টা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে থাকবে। তো ও এস আই পি টা শুরু করার আগে একবার দেখে নিল সেই ইনডেক্স ফান্ড টা লাস্ট দশ বছরে গড়ে কত রির্টান দিয়েছে। ও দেখলো ১২% দিয়েছে। তো ও এইবার গুগুলে এস আই পি কেলকুলেটার লিখে র্সাচ করল আর একটা এস আই পি কেলকুলেটরে এটা কেলকুলেট করে দেখলো যে ও যদি প্রতি মাসে দশ হাজার টাকা করে সেই ইনডেক্স ফান্ডটাতে এস আই পি করে আর গড়ে ১২% রির্টান পায় তাহলে মাত্র বিশ বছরের মধ্যেই ও একদম কোটিপতি হয়ে যাবে। সঙ্গে সঙ্গে আর দেরি না করে ওর ২২তম জন্ম দিনের দিন থেকেেই ও সেই ইনডেক্স ফান্ডে দশ হাজার টাকার একটি এস আই পি চালু করে দিল। আর যেহেতু ওর সেলারি প্রতি মাসের এক তারিখের মধ্যে ওর ব্যাংক একাউন্টে ঢুকে যেত তাই প্রতি মাসের তিন তারিখে এস আই পির ডেট টা সেট করে রাখল। যাতে সেলারি ঢুকার পর পরি মাসের শুরুতেই কোনো টাকা খরচ করার আগেই এস আই পির টাকা টা ওর ব্যাংক একাউন্ট থেকে কেটে ওই ইনডেক্স ফান্ডে ইনভেস্ট হয়ে যায়। এর পর আস্তে আস্তে ওর সেলারি বারল কিন্তু তার সাথে সাথে বিয়ে করে বাচ্চা কাচ্চা পয়দা করে নেওয়ায় খরচাও সমান ভাবে বেড়ে গেল। কিন্তু তবুও সঠিক ভাবে ফাইনেনসিয়াল প্লানিঙ্গ এ বাজেট মেইনটেইন করে চলার কারনে নানা রকম বাধা বিপত্যি আসা সত্তেও নিরমল ওর সেই দশ হাজারে টাকার এস আই পি টা কান্টিনিউ করে যেতে সক্ষম হলো। এ ভাবে মাত্র ১৮বছর চলার পর নিরমল ওর ৪০ তম জন্ম দিনের দিন যখন ওর ইনভেস্টমেন্ট সাইট টা চেক করল তখন ও জানতে পারল ও যেই ১২% আসা করে হিসেব করেছিল তার পরিবর্তে ১৪% করে রির্টান পাওয়ায় আজ অর্থাৎ ১৮ বছর পরি নিরমল কোটিপততে পরিনত হয়েছে। সেইদিন খুশিতে নিরমলের চোখ থেকে জল চলে আসলো। আর ওর ৪০ তম জন্ম দিনটা সব থেকে স্বরনীয় হয়ে থেকে গেল। মাত্র ৪০ বছর বয়সে কোটিপতি হওয়ায় নিরমলের ওর ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা করাতে বা ওদের বিয়েসাদি দিতে কেখোনো আর্থিক ভাবে টানা পরনের মুখোমুখি হতে হলো না। এই ভাবে বছরের পর বছর শুধু মাত্র ফাইনেনসিয়াল ডিসীপ্লিন মেইনটেন করে খুব সামান্য একটা বেতনের চাকরি করে নিরমল একজন কোটিপতিতে পরিনত হলো। সবসময় মনে রাখবে সেয়ার মার্কেট হলো ধর্য্যহীন একটা লোকের পকেট থেকে ধর্য্যশালী লোকেদের পকেটে টাকা ট্রান্সফার করার একটা মাধ্যম।