সকালের সূর্যটা তখন দিঘন্তের উপর দিয়ে উঠছিলো আর বাতাসে তাজা কফির সুভাস ভেসে আসছিলো। আয়েশা কম্পিউটারের দিকে অপলক দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে ছিলো। সে তার ব্যবসা বড় করার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করে যাচ্ছিলো। আর এতো কিছু করার পরও তার কাছে পড়ে ছিলো অসম্পূর্ণ অনেক গুলো কাজের লিষ্ট আর এক রাস হতাসা। আর সে সব সময় একজন উদ্যোগী এবং পরিশ্রমী লোক ছিলো। আর ও তার ব্যবসা বড় করার জন্য সমস্ত শক্তি এবং এতো কিছু করার পরও তার কিছু একটা মিসিং মনে হতো। ও ওর মন থেকে কখনই এই অনুভব টা ছেড়ে ফেলতে পারে নি যে জীবনে টাকা উপার্জন করা আর জীবনে সফলতা ছাড়াও জীবনে আরও অনেক কিছু রয়েছে। আর তখন সে অনুভব করলো যে তাকে তার আত্মা দিয়ে কাজ করতে হবে আর আত্মা দিয়ে ব্যবসা করতে হবে। আয়েশা যে সমস্যাটির সাথে লড়ছিলো অনেক লোকই এই সমস্যার সাথে লড়ছে। তারা তাদের ব্যবসা দাড়া করানোর জন্য তাদের সমস্ত শক্তি ব্যয় করে কিন্তু তারা ভুলে যায় যে তারা শুধু একটা ব্যবসা দাড়া করাচ্ছে না বরং তারা একটি জীবন তৈরি করছে। তারা তাদের লক্ষ্য এবং স্বপ্ন হারিয়ে ফেলে আর শেষ হয়ে যায়। তারা তাদের ব্যবসা মন দিয়ে এতটাই করতে থাকে যে তারা তাদের ব্যবসা আত্মা দিয়ে করতে ভুলে যায়।
তারা তাদের মার্কেটিং আর সেলসস রিপোর্ট নিয়ে এতো টাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে যে তারা তাদের ব্যবসার মূল্য আর পারপাস ভুলে যায়। আত্মা দিয়ে ব্যবসা করা সহজ আর এটার ফলাফলও অনেক ভালো। আত্মা দিয়ে ব্যবসা করা শুধু লাভজনকই না, মিনিংফুল আর প্রোফিট্যাবলও বটে। এতে করে তুমি এমন কিছু তৈরি করতে পারবে যেটা সত্যি তোমার জীবনে ম্যাটার করে। যেটা করলে তুমি তোমার জীবনের পারপাস আর মানেও খুজে পাবে।
নিজের আত্মা দিয়ে ব্যবসা করা এমন একজন সফল প্রতিষ্ঠান হলো টম সুজ। টম সুজের প্রতিষ্ঠাতা একটি সহজ এবং শক্তিশালী বুদ্ধি দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। প্রত্যেক জোড়া বিক্রি হওয়ার জন্য তিনি এক জোড়া জুতা একজন গরিব লোককে ফ্রিতে দিবেন। এই বুদ্ধিটা সারা পৃথিবীর মানুষকে মুগ্ধ করেছিলো। আর এভাবেই টম সুজ কোম্পানি এতোটাই সফলতা পেয়েছে। কিন্তু তিনি সেখানেই থেকে থাকেন নি তিনি আরও অন্যান্য সামাজিক কাজেও অংশগ্রহন করে ছিলেন। যেমন- দুর্গম জায়গায় পিউরিফাইং করা পানি সরবরাহ করা, মহিলাদের সেফ বার্থ কিট সরবরাহ করা ইত্যাদি।
আমরা এমন একটা পৃথিবীতে বসবাস করি যেখানে মুনাফাই সব। যে কাজে কোনো মুনাফা নেই সেই কাজে কোনো দাম নেই। কিন্তুআত্মা দিয়ে ব্যবসা করা শুধু পৃথিবীর জন্যই মুনাফাময় নয় বরং ব্যবসার জন্যও মুনাফাময়। সওলফুল ব্যবসা তৈরি করা মানে শুধু এই নয় যে অন্যের খেয়াল রাখা। এর মানে হলো নিজের আর নিজের টিমেরও খেয়াল রাখা। তাদের এমন ভাবে মূল্যায়ন করতে হবে যে তাদের নিয়েই তোমার এই ব্যবসা গড়ে উঠেছে।
নিজেকে তুমি জিঙ্গেস করো কেনো তুমি ব্যবসা করতে চাও। তাহলে তুমি তোমার ব্যবসার সঠিক দিক খুজে পাবে। একটা ব্যবসা করতে গেলে চিন্তা, ক্লান্তি আসবে এটাই স্বাভাবিক। তাই ব্যবসা সঠিক ভাবে দাড়া করানো পাশাপাশি সমান ভাবে নিজের যত্ন নেওয়া দরকার। তাই শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সুস্থ্য থাকাকে মূল্যায়ন করতে হবে আর দরকার পড়লে ছুটি নিতে হবে। এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে তোমার আশেপাশের লোক জন তোমাকে সাহায্য করবে, শক্তি যোগাবে, এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আর এটা নিশ্চিত করতে হবে যেনো তোমার টিমের প্রত্যেকেই মূল্যায়ণ আর সম্মান পায়।
একটা রিপোর্টে দেখা গেছে যেসব কোম্পানি গুলো তাদের কর্মচারীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরন করে আর তাদের মূল্যায়ন করে আর পরিবেশের উপর খেয়াল রাখে তারা তাদের কম্পিটিটর দের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে থাকে। অন্য আর একটি রিপোর্টে দেখা গেছে যেসব লিডাররা তাদের কাজের পার্পসার সম্পর্কে ক্লিয়ার থাকে, তারা চিন্তা আর সময়ের সাথে সাথে কাজ গুলো সঠিক ভাবে করতেও সফল হয়। তাই হার্ট এবং আত্মা দিয়ে ব্যবসা করলে যে শুধু ব্যবসায় সফলতা পাওয়া যায় তাই নয় পার্সোনাল ফুলফিলমেন্টও পাওয়া যায়। যার ফলে মানসিক ভাবে সুস্থ্য থাকাও সম্ভব হয়।
এসব কথা অনেক কোম্পানির সফল প্রতিষ্ঠাতারাও বলেছেন। যেমন- অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা বলেছিলেন যে “তোমার কাজ তোমার জীবনের বড় একটা অংশ দখল করে থাকবে। আর তাই জীবনের আত্মতৃপ্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো সেই কাজ করা যেটা তোমার মতে একটা মহান কাজ। আর সেই মহান কাজটা করার একমাত্র উপায় হলো তুমি যেই কাজই করো সেটা ভালোবেসে করা।”
আর এই কথা গুলো আমাদের জীবনের কাজের গুরুত্ব বুঝিয়ে দেয় আর কাজ করার শক্তিও বাড়িয়ে দেয়। শক্তিশালী ব্যবসা দাড়া করানো সব সময় সহজ হয় না। সফল ব্যবসায়ী এই নয় যে শুধু টাকা ইনকাম করা। যেটা আসলেই তোমার কাছে কোনো কিছু একটা ম্যাটার করা। তাই এখনই নেমে পড়ো আর এমন একটি ব্যবসা তৈরি করো যেটা সওলফুল হবে এবং পুরো পৃথিবীটাকে বদলে দিবে। তাই যদি তোমার কাছে পোষ্টটি ভালো লাগে তাহলে তোমার আশেপাশের লোকেদের সাথে শেয়ার করো আর বলো হার্ট এবং আত্মা দিয়ে যাতে কাজ শুরু করে।
ধন্যবাদ।