স্কুল পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা প্রায়ই একটা প্রশ্ন করে যে কিভাবে পড়াশোনায় মন বসানো যায়? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে আমি আপনাকে একটা কথা জিঙ্গেস করতে চাই। আপনি কি কখনো এই প্রশ্ন টা করেছেন? কিভাবে মন দিয়ে PUBG বা FREE FIRE খেলতে হয়? বা কিভাবে INSTRAGRAM REELS বা SHORTS এক মনে দেখবেন? না আপনি কখনোই এই প্রশ্নগুলো করেন না। কারন এই কাজগুলো করার সময় আপনার আলাদা ভাবে মনযোগ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এই কাজে আপনার অটমেটিকালি মনোযোগ বসে। এর জন্য দায়ি হলো মস্তিষ্কের DOPAMINE নামের একটি হরমনের খরন। আমরা যখন আনন্দে থাকি তখন আমাদের মস্তিষ্কের ভিতর এই DOPAMINE হরমন নিঃস্বরন হয়। আমরা যখন গেম খেলি বা ভিডিও দেখি তখন আমরা ভিশন মজা পাই। আর ঠিক তখন instantly আমাদের মস্তিষ্কে DOPAMINE নিসৃত হয়। পড়তে গিয়ে আমাদের মন কিছুতেই পড়াশোনায় বসে না । কারন আমাদের পড়তে ভালো লাগে না। আর সেই কারনেই আমাদের মস্তিষ্কে DOPAMINE নিসৃত হয় না। আমাদের মন DOPAMINE এর খুজে এইদিক ওইদিক ছুটে বেড়ায়। এ জন্য পড়াশোনা করার সময় আমরা কিছুতেই মনযোগ বসাতে পাড়ি না। কিভাবে পড়াতে মনযোগ দেওয়া যায় এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অনেকে বলে যে পড়াশোনাটা কে আমাদের ইনজয় করা উচিত।কিন্তু সত্যি বলতে কি সাধারন স্টুডেন্ট হোক বা ক্লাসের টপার পড়াশোনা করতে কারোরই ভালো লাগে না। একবার আমি আমার এক টপার বন্ধুকে জিঙ্গাস করেছিলাম । যে প্রত্যেকবারি ৯০% মার্কস পেত। তুই সারাদিন এত পরিস কি করে? তর কি পড়তে খুব ভালো লাগে? কিভাবে মন দিয়ে পড়াশোনা করব? এই প্রশ্নের উত্তরে ও বলেছিল না আমার ও পড়তে ভালো লাগে না। যেহেতু আমি একটি ORGANISED WAY তে পড়াশোনা করি,তাই পড়া শেষ করতে আমার বেশি সময় লাগে না। আমার টপার বন্ধুর সাথে কথা বলার পরে আমি বুঝতে পেড়েছিলাম টপাররা কিভাবে পড়াশোনা করে।আমার পারসোনাল এক্সপ্রিয়েন্স ছারাও কিছু বই পড়ে আর অনেক রির্সাচ করে আমি এই বিষয়টা বুঝতে পাড়লাম। তাহলে চলুন আর দেরি না করে পড়াশোনায় মন দেওয়ার ট্রিক্স যেনে নেই।পড়াশোনায় মন দেওয়ার জন্য আমি আপনাকে বলবনা যে টাইম টেবিল তৈরি করে পড়াশোনা করা উচিত,রুল্স সেট করা উচিত।কেননা আপনি গুগুল র্সাচ করলেই এই সব জিনিস পেয়ে জাবেন। আর আপনি অবশ্যই ইতি মধ্যে এই সব জিনিস ট্রায় করে ফেলেছেন। আপনি যদি চান আপনার পড়াশোনায় মন দেওয়া উচিত তাহলে আপনাকে এই সমস্ত কিছু ভুলে যেতে হবে। আর শুধু একটি সিসটেম তৈরিতে ফোকাস করতে হবে। কারন আপনি যখন সিসটেমেটিকালি পড়াশোনা করবেন তখন না আপনার উইল পাওয়ারের দরকার হবে আর না জোর করে নিজেকে পড়তে বসাতে বাধ্য করতে হবে। একবার সিসটেম এ অভ্যাস করতে পারলে আপনি নিজে থেকেেই পড়তে বসতে চাইবেন। সুতরাং আসুন এখন আমরা যেনে নেই কিভাবে আপনি আপনার এই সিসটেম ডেভলপ করতে পারবেন।
স্টেপ-১)TIME MANAGEMENT:-প্রথমে আপনাকে একটি কাগজ এবং একটি কলম নিয়ে বসতে হবে। আর সেই সঙ্গে দেখতে হবে আপনার কাছে সারাদিনে ঠিক কতটুকু সময় আছে। আপনি যখন মেনুয়েলি লিখে আপনার সময়ের হিসাব করবেন তখন আপনার মনও এই বিষয়ে সচেতন হবে। সারাদিনের সময় হিসাব করার পর দেখবেন এই সময়ের মধ্যে আপনি কখন পড়াশোনা করতে পারবেন। পড়াশোনা করার জন্য আপনি এমন একটি সময় বেছে নেন যখন কেও আপনাকে খুব বেশি বিরক্ত না করতে পাড়ে।এই সময় নিয়মিত ভাবে পড়াশোনা করতে বসুন।আপনি যখন প্রতিদিন একই সময় পড়াশোনা করতে বসবেন তখন আপনার মস্তিষ্ক সজাগ থাকবে। আর আপনার মন আপনাকে প্রতিদিন একই সময় পড়াশোনা করতে উ্ৎসাহিত করবে। টাইম মেনেজ করার পর যখন আপনি পড়াশোনা করতে বসেন তখন আপনার মন রঙিন প্রজাপ্রতির মত এখানে ওখানে উরতে শুরু করে। আপনি যদি অনেক উৎসাহ নিয়ে পড়াশোনা করতে বসেন তাহলেও ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের বেশি পড়াশোনায় মনযোগ দিতে পারেন না।তারপরে আপনার অবস্থা অনেকটা নবিতার মত হয়ে যায়। এই জন্য যদি আপনি অনেক সময় ধরে পড়াশোনায় মনযোগ দিতে চান তাহলে এই ছোট ছোট উপায়গুলো ব্যবহার করবেন ।
স্টেপ-২) USE FIVE SECOND RULE:-NO.1.যদি আপনি পড়তে বসতে না পারেন বা আজ না কাল করতে থাকেন তাহলে এই টেকনিক টা আপনার কাজে লাগতে পারে।এই টেকনিক আপনাকে বলে যে আপনি যদি কোনো কাজ করতে চান ধরুন আপনি হাটতে যেতে চান তাহলে আপনাকে মাত্র ৫ সেকেন্ড এর মধ্যে জুতো পরে বাইরে বেরিয়ে যেতে হবে। একই ভাবে যদি আপনি পড়াশোনা করতে চান তাহলে আপনাকে কোনো কিছু না ভেবেই সোজা আপনার স্টাডি টেবিলে গিয়ে বসতে হবে। যখন আপনি এই টেকনিক টা এপলাই করবেন আপনার হয়ত ভালো লাগবে না। কিন্তু ১০ মিনিট পড়ার পরে আপনি যানতে পারবেন না কখন ১০ মিনিট থেকে ৪০ মিনিট সময় পার হয়ে গেছে। আর আপনি একই ভাবে পড়েই জাচে্ছন পড়েই জাচে্ছন। পড়তে বসা অনেকের জন্যই কঠিন কাজ কিন্তু এই টেকনিকটা এপলাই করে যে কউ সহজেই পড়তে বসতে পাড়ে।
NO.2.USE PROMODORO TECHNIQUE:-বিঙ্গান বলছে যখন আমরা দীর্ঘ সময় ধরে কোনো কাজে আমাদের মনযোগ দেই তখন একটা সময়ের পর আমাদের মনযোগ এইদিক ওইদিক যেতে শুরু করে। এজন্যই কাজের দিকে মনযোগ দেওয়ার জন্য PROMODORO TECCCHNIQUE তৈরি করা হয়েছে। যা বলে আপনাকে ২৫মিনিট কাজ করতে হবে বা পড়াশোনা করতে হবে আর তারপরে ৫ মিনিটের ব্রেক নিতে হবে। ৫মিনিটের ব্রেক শেষ করার পরে আপনাকে ২৫ মিনিটের জন্য আবার কাজ করতে বা পড়াশোনা করতে হবে। আর তারপরে আবার ব্রেক নিতে হবে।এই ভাবে কাজ করা আর ব্রেক নেওয়ার ফলে সহজেই আপনার কাজে মনযোগ ধরে রাখতে পারবেন। এমনও হতে পারে যে আপনি পড়াশোনায় এতটাই মনযোগি হয়ে গেলেন যে আপনার ব্রেক নেওয়ার কথা মনেই থাকবে না। বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তিদের একজন jeff bezos কাজে মনযোগ দেওয়ার জন্য PROMODORO TECHNIQUE ব্যবহার করে।
NO.3.USE 80/20 PRINCIPLE:-পড়াশোনায় মন দেওয়ার জন্য এটিকে একটি দারুন টেকনিক হিসেবে কনসিডর করা হয়। 80/20 principle বলে 80% রেজাল্ট 20% ইর্ফট থেকে আসে। কাম্পানির ৮০% প্রফিট কম্পানির ২০% ইর্ফট থেকে আসে। ২০% সেল্সমেন ৮০%সেল করে। একই ভাবে পরীক্ষার ৮০% প্রশ্ন ২০% পোরশন থেকে করা হয়। অতএব পড়াশোনা করার সময় স্টুডেন্টদের সেই ২০% এর উপর বেশি ফোকাস করা উচিত। যাতে তারা ২০% এর উপর ফোকাস দিয়ে আরও ভালো রেজাল্ট করতে পারে আর পরে যাতে পুরো বিষয়টার উপর ব্রটস আই ভউ নিয়ে নিতে পারে। আপনি যদি এই টেকনিক গুলো ফলো করেন তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার পড়াশোনায় মনযোগ দিতে পারবেন। পড়াশোনাকে মজার ও আর্কসনিও করতে বা পুরো মনযোগ দিয়ে করতে অবশ্যই এই কাজগুলো করুন। ১)সুইচ অফ ইউর মোবাইল-পড়তে বসার সময় আপনার মোবাইর সুইচ অফ করে আপনি আপনার বাবা মা কে দিয়ে দিন অথবা অন্য ঘরে রেখে দিন।২)ব্রিথিঙ্গ এক্সারসাইজ করবেন-পড়াশোনা করার সময় যদি পড়ায় মন না বসে তখন ২ মিনিটের জন্য ব্রিথিঙ্গ এক্সারসাইজ করবেন। এতে করে আপনার মনযোগ আবার আপনার কট্রোলে আসবে। আর আপনি মনযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন। ৩)ক্রিয়েটিভ আইডিয়াস-পড়ার সময় আপনার বিভিন্ন ক্রিয়েটেভ টেকনিক ব্যবহার করা উচিত যেমন আপনি হাইলাইটার বা স্টিকি নোস্ট ব্যবহার করা উচিত।যা আপনার পড়াশোনা কে আর্কসনিয় করে তুলতে সাহায্য করে।৪)নোটস তৈরি-আপনি যদি কোন টপিক নিয়ে পড়াশোনা করেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে নোট তৈরি করতে হবে। আপনারা যদি এই টেকনিক গুলো ফলো করেন তাহলে আপনারা অবশ্যই পড়াশোনায় মনযোগ দিতে পারবেন।